ফাহিম ফিরোজ ॥ মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকায় বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির ছয় আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতিকে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির তলবী সভার মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় মামলা থেকে নির্দোষ না হওয়া পর্যন্ত বরিশাল আইনজীবী সমিতির সদস্য পদ স্থগিত থাকবে, বরিশাল আইনজীবী সমিতি থেকে ভাড়া নেয়া চেম্বার বাতিল করা হবে এবং বার কাউন্সিলের সদস্য পদ স্থগিত রাখার জন্য বরিশাল আইনজীবী সমিতি আবেদন করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
জানা গেছে, বরিশাল আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি-সম্পাদক সিনিয়র আইনজীবী মানবেন্দ্র বটব্যাল, সাবেক সভাপতি-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মোঃ ইফনুস এবং বরিশাল আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি-সম্পাদক ও সরকারি কৌশুলী (জিপি) মু. ইসমাইল হোসেন নেগাবানের এক আবেদনের মাধ্যমে মাদকের সাথে জড়িত ছয় আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী তুলেন।
ছয় আইনজীবী হলেন, এ্যাড. রিয়াজ উদ্দিন মিলন, এ্যাড. বজলুর রশিদ রুমি, এ্যাড. তানভীর আহম্মেদ, এ্যাড. মাসুম খান, এ্যাড. সাইদুল হক খান জুয়েল ও এ্যাড. শেখ জিয়াউর রহমান রুমি।
সিনিয়র তিন আইনজীবীর আবেদনের পক্ষে ১৫২ জন আইনজীবী মাদক ব্যবসায়ী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সম্মতি দিয়েছেন। মঙ্গলবার বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির তলবী সভায় আবেদনের ব্যাপারে কোন আইনজীবী বিরোধীতা করে বক্তব্য রাখেননি। তবে একমাত্র আইনজীবী রবিউল ইসলাম রিপন এ বিষয়ের বিরোধীতা করেন।
বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজুর সভাপতিত্বে তলবী সভায় উপস্থিত ছিলেন সরকারি কৌশুলী (জিপি) মু. ইসমাইল হোসেন নেগাবান, সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মোঃ ইফনুস, সিনিয়র আইনজীবী তপন কুমার চক্রবর্তী, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ টিপু সুলতান, সাবেক সম্পাদক কাজী মনিরুল হাসান, বিশ^ নাথ দাস মুন্শী, বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ খানসহ প্রমুখ।
এশটি সূত্র জানিয়েছে, এ্যাড. রিয়াজ উদ্দিন মিলন, এ্যাড. বজলুর রশিদ রুমি, এ্যাড. তানভীর আহম্মেদ, এ্যাড. মাসুম খান, এ্যাড. সাইদুল হক খান জুয়েল ও এ্যাড. শেখ জিয়াউর রহমান রুমি ছাড়াও চারজন আইনজীবীর নামে বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির কাছ থেকে ভাড়া নেয়া চেম্বারে বসে মাদক বিক্রি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২০ জানুয়ারী নাজিরমহল্লার নিজ বাসা থেকে অ্যাডভোকেট সাইদুল হক খান জুয়েলকে ১৯ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করে পুলিশ।
২০১৯ সালের ১১ মে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আদালতপাড়ার জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনের পাশে একটি চেম্বার থেকে এ্যাড. রিয়াজ উদ্দিন মিলনকে ১০ বোতল ফেন্সিডিলসহ আটক করে পুলিশ। এর আগে ২০১৫ সালে অ্যাডভোকেট মিলনের একই চেম্বার থেকে ৪০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছিল। তখন মিলন পালিয়ে গ্রেফতার এড়াতে সক্ষম হন। পরে আদালতে হাজির হয়ে তাকে দীর্ঘদিন কারাভোগ করতে হয়।
২০১৮ সালের ১৭ মে বৃহস্পতিবার সকাল ৫টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সিনিয়র আইনজীবী শেখ জিয়াউর রহমান রুমিকে ১৪ পিচ ইয়াবাসহ আটক করে পুলিশ। এছাড়া বাকী তিনজন আইনজীবীও ইয়াবা-ফেন্সিডিলসহ আটক হয়।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply